গাঁয়ের নাম ছিল সুরঞ্জনপুর। গাঁটি ছিল সবুজে ঘেরা, নদী ভরাট, আর মাঠে খেলা চলত অবিরাম। কিন্তু একটি বছর এসে গাঁয়ের মানুষের জীবনে দুর্ভিক্ষের ছায়া নেমে আসে।
গাঁয়ের প্রধান ছিলেন মানিক বাবু। তিনি অনেক দানশীল ও সদাচারী ছিলেন। দুর্ভিক্ষের ফলে মানুষ যখন খাবারের জন্য হাহাকার করতে শুরু করে, তখন তিনি গাঁয়ের সমস্ত মানুষকে একত্রিত করে একটি সভা ডাকেন।
সভায় মানিক বাবু বলেন, "আমাদের মধ্যে সহযোগিতা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। আমরা সবাই মিলে যদি কিছু জমি থেকে ফলন নিয়ে আসতে পারি, তাহলে সবাইকে সহযোগিতা করতে পারব।"
একজন বৃদ্ধ কৃষক, যিনি খুব দীনহীন ছিলেন, দাঁড়িয়ে বললেন, "মানিক বাবু, আমার জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি কিছুই করতে পারব না।"
মানিক বাবু সবার দিকে তাকালেন এবং বললেন, "আমরা সবাই যদি একত্রে কাজ করি, তবে কারো জমি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কিছু হয় না। আমরা মিলে কৃষিজমি তৈরি করব এবং খাদ্য উৎপাদন করব।"
গাঁয়ের যুবক-যুবতীরা সবাই এগিয়ে এলেন। তারা একত্রে মাঠে কাজ করতে লাগলেন। তারা সকলে হাতে হাত রেখে ধান রোপণ করতে লাগলেন। কৃষকরা আবার নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করলেন।
দিনগুলো চলে গেল। ধীরে ধীরে গাঁয়ের মানুষরা খাবারের জন্য সংগ্রাম করতে করতে নতুন আশার আলো দেখতে পেল। তারা একসাথে কাজ করে অনেক ফসল ফলাতে সক্ষম হলো।
দুর্ভিক্ষের শেষে যখন ফসল কাটার সময় এলো, তখন সবার মুখে হাসি ফুটল। মানিক বাবু গর্বিত হলেন গাঁয়ের মানুষের সহযোগিতার জন্য। তিনি বললেন, "দুর্ভিক্ষ আমাদের একত্রিত করেছে। আমরা জানলাম, একত্রে থাকলে সব কিছু সম্ভব।"
এভাবে সুরঞ্জনপুরের মানুষ দুর্ভিক্ষকে জয় করল এবং তাদের একতা ও সহযোগিতার মাধ্যমে নতুন জীবনের সূচনা করল।
শিক্ষা: দুর্ভিক্ষ বা কোনো দুর্যোগের সময়, একতা এবং সহযোগিতা আমাদের শক্তি দেয়। আমরা যদি একত্রে কাজ করি, তবে কোনো বাধাই আমাদের ঠেকাতে পারবে না।
0 Comments